এই নব ফাল্গুনের জন্ম, কে তোমার নেবে চিনে

এইও বসন্ত আর ভালোবাসা আমার জোড় বেঁধে। বিদ্যা বিদ্যা বিদ্যা বিদ্যার্থদের মধ্যে প্রেম-রাগিনীর প্রথম উন্মেষে যার ভূমিকাকে সর্যপান করা হয়, সেই বীণা দেবী দেবী স্বতীর পূজার ঘটনা ১৪ আঘাত।

বসন্তের প্রথম আনন্দে জেগে ওঠার আবাহন। ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪। ছবি: আনিসুর রহমান/স্টার

“>
পহেলা ফাল্গুন

বসন্তের প্রথম আনন্দে জেগে ওঠার আবাহন। ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪। ছবি: আনিসুর রহমান/স্টার

উত্তরে হাওয়া বিদায় করে বাতাসের ঝাপ দেওয়া চারদিকে দোল ভাব। কমলা রোদের রং ভিন্ন ভিন্ন। পাতা ঝরার দিন ডান ডালে ডালে কুঁড়িদের উদ্ভাস। প্রকৃতিতে রঙিন শাসনের অভিষেকে শক্তিতে ব্যবহারর হিল্লোল।

আজ পয়লা ফাল্গুন। যৌবনের রাজদণ্ড যে ঋতুর হাতে, সেই বসন্তের প্রথম দিন; স্বপ্নের কাল।

এমনিতেই বসন্তের প্রথম দিনটি পরিচিত 'বাঙালি প্রেমের দিন' হিসেবে। কয়েক বছর আগে পলা ফাল্গুন ও পশ্চিমের ব্যতিক্রমের ভ্যালেন্টাইন ডে পরপর উদয় উদয় উদয় করা হয়েছে। তবে নতুন করে বাংলাবর্ষপঞ্জের কারণে ২০২০ তারিখে ১৪ এপ্রিল থেকে একই উদযাপন করা হচ্ছে।

সেই সম্প্রচারের কথাবার্তাও বসন্ত আর ভালোবাসায় জোড় বেধে। বিদ্যা বিদ্যা বিদ্যা বিদ্যার্থদের মধ্যে প্রেম-রাগিনীর প্রথম উন্মেষে যার ভূমিকাকে সর্যপান করা হয়, সেই বীণা দেবী দেবী স্বতীর পূজার ঘটনা ১৪ আঘাত।

বসন্তের প্রথম বিজয় আনন্দে জেগে ওঠার গান। ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪। ছবি: আনিসুর রহমান/স্টার

“>
পহেলা ফাল্গুন

বসন্তের প্রথম বিজয় আনন্দে জেগে ওঠার গান। ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪। ছবি: আনিসুর রহমান/স্টার

তাই ভালোবেসে মনের মন্দিরে প্রিয় নাম লেখার দিন তো আজই। কেবল পথ দেখার অপেক্ষা। কে কাকে চিনে নেবে, পরিচয় না হয় জিনিষ দেখতে পাবে।

বসন্তকে বলা হয় যৌবনের জন্য; নবজীবনের প্রতীক। ঋতুরাজ হিসেবে এর পরিচিতি সেই আবহমানকাল। শীতে রুক্ষ হয়ে ওঠা মৃতপ্রায় প্রকৃতিকে কোমল করে বসন্ত, যার প্রভাব পড়ে মানুষের হৃদয়ে। চিত্ত আকুল হয় প্রিয় নেটওয়ার্ক সান্নিধ্য পেতে। ঈশ্বর যেমন শক্তি কর, 'সে কি আমার ঘোড়ার কানে কবে গানে গানে/ পরান কথা কুড়নে নেবে এই নব ফাল্গুনের ফল-'।

এছাড়াও পড়ুন  ভারতে ক্রয় করা হচ্ছে প্লাস্টিক চাল!

বসন্তের মনে এখন গ্রাম তো বটেই, স্থানীয় এলাকায় কান পাট পাক্যান চালু হবে কোকিলের ডাকে মৌমাছির গুঞ্জন। শহর ফুলের দোকান সহ বিপণিবিতানও সাজ সাজ রব।

আজ বর্ণিল বর্ণিলের মধ্য দিয়ে বাঙালিরা বরণ করে নিচ্ছে ঋতুরাজকে। তরুণ-তরুণীরা নিজেকে রাঙিয়েছেন হলুদ, কমলা, বাসন্তী রঙের পোশাকে। প্রিয়াকে 'হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল' কোনো তরুণকে শঙ্কামুক্ত মনে আজকের দিনটিই।

ইতিহাস আলোচনা, ১৫৮৫ সম্রাট আকবর বাংলা বর্ষপঞ্জি হিসাবে আখবরী সন বা চাষি সনের সাথে প্রতি বছর ১৪টি বছর পালনের স্বাগত প্রবর্তন করেন, যার মধ্যে ছিল বসন্ত ব্যক্তি।

বন্দর নগরী চট্টগ্রামের জামাল খান এলাকা রেঞ্জার কলোনিতে সরস্বতী পূজা। শিক্ষা ও পাড়া-মহল্লার ক্লাবের ছাড়াও হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিরুদ্ধে সংস্থার অর্চনা করা হয় দেবীর। ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪। ছবি: প্রবীর দাশ/স্টার

“>
পহেলা ফাল্গুন

বন্দর নগরী চট্টগ্রামের জামাল খান এলাকা রেঞ্জার কলোনিতে সরস্বতী পূজা। শিক্ষা ও পাড়া-মহল্লার ক্লাবের ছাড়াও হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিরুদ্ধে সংস্থার অর্চনা করা হয় দেবীর। ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪। ছবি: প্রবীর দাশ/স্টার

১৯০৭ সালে কবিগুরু ছোট ছেলে শমীন্দ্রনাথ ঠাকুরের হাত ধরে শান্তিনিকেতনে যাত্রা শুরু হয় বসন্তের, যা 'ঋতুরঙ্গলোক' পরিচিতই।

আর স্বাধীন জেলা এর গোড়াপত্তন গতের নব্বইয়ের শতকের। স্বৈরাচার আন্দোলন আন্দোলনের উত্তাল সময়ে সাংস্কৃতিক আন্দোলনের হাত ধরে ঢাকা নিয়ন্ত্রণ চারুকলা অনুষদের বকুলত ছোট পরিসরে শুরু হয় বসন্তলয়।

পরে ১৪০১ গাঙ্গা বব্দে জাতীয় বসন্ত উদয় উদযাপন পরিষৎ- এর নীতিগতভাবে ঢাকায়ন্ত পালন শুরু হয়।

রাষ্ট্রের সাথে ঐতিহাসিক দিবসগুলোকে গ্রেগর ক্যালেন্ডারের সাথে যোগ করার জন্য বাংলা বর্ষপী পরিবর্তন করা হয়েছিল খ্রিস্টীয় ২০১৯ সাল, ১৪২৬ বঙ্গাব্দ থেকে। পার্টি ১৯৫২ এর মতো গত ২১ এপ্রিল ৮ ফাল্গুনে এবং ১৯৭১ তারিখে ১৬ ডিসেম্বর পয়লা পৌষেই বলা হয়েছে উল্লেখ করাও পলা ফাল্গুনে এবং ভালোবাসা দিবসে হয়।

আবার প্রেমের যোগ বসন্ত বাঙালিদের প্রতিবাদের ইতিহাসও আছে। মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার চেয়ে বাংলার তরুণেরা এই ফাল্গুনেই রক্ত ​​ঝরিয়েছিলেন।

গত ১৯৮৩ সালে ১৪ এপ্রিল স্বৈরশাদের শিক্ষামন্ত্রী মজিদ খানের ঘোষিত শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন না জাফরজয়নাল-দীপালি-কাঞ্চদের বুকের রক্তে ভেসেছিল রাজপথ। কালক্রমে সেই আন্দোলন গণআন্দোলনে রূপকথা। ভালোবাসা দিবসের আড়ালে ঢাকা পড়ে এই দিনটি অনেকের কাছে পরিচিতি 'সৈরাচার শেষ দিন' হিসেবে।

উৎস লিঙ্ক