- সাবির মুস্তাফা
- পছন্দ, বিসি নিউজ বাংলা
বিবিসি বাংলা অনেক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেছে, যেটি বিদেশী উন্নয়নতা ছিল। কিছু পথকে সতর্ক যুগান্তকারী বলা যেতে পারে। কিন্তু ক্ষমতার বেশির ভাগ ছিল ইতিহাসের কোন একটি বিশেষ সময়ে সংবাদের বিশেষ চাহিদা মেটানোর কথা।
যেমন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় প্রতি প্রতি খবর। দেখতে যুদ্ধ-অবরুদ্ধ মানুষের কাছে সে সময় খবরই ছিল এক যুগান্তকারী বৈঠক।
তারপর আশির শেষের শেষ তৎকালীন নেতা শাসক জেনারেল হুসেইন মুহাম্মদ এরশাহ তার দিকে তার প্রতিপক্ষের আন্দোলনের আন্দোলন তুঙ্গে তখন বিবিসির আবার পার আপিলিসিম।
হরতাল, মিছিল, মিটিং, আন্দোলনের খবর যাতে জনগণের কাছে না দেখায়, ভোটই লক্ষ্য ছিল লক্ষ্য। সে লক্ষ্যে দেশের মিডিয়ার উপর আরোপ করা হয়। এমন বিবিসি বাংলার মানুষের ওপর মানুষের চাপ পড়ে যায়।
একই জিনিস নিয়ে ১৯৯০ শেষ, যখন প্রার্থীদের বিরুদ্ধে আন্দোলন গণঅভ্যুত্থানে রূপকথা। বিবিসি বাংলার আমরা সহ বারবার সতর্কতা চালু করার জন্য ২০০৬ অবিলম্বে অবিলম্বে জনগণকে সমর্থন করে, কেয়ারটে সরকারকে নিয়ন্ত্রণের ওপর নির্ভর করে নির্বাচন, অস্থায়ী এবং তাদের হস্তক্ষেপের মাধ্যমে স্থির করা জরুরি অবস্থার মধ্য দিয়ে।
আলোড়নকারী সূত্রমালা
তবে শুধুমাত্র ছিল ছিল প্রচার-নির্ভর, সংবাদ পরিবেশনের কথা। কোন একক বিষয়ের উপর একটি মেলা, যার সাথে সাময়িক যোগাযোগ নেই, যে কোনভাবে 'খবর' বলা যাবে না, সে কোন ফিচার সচরাচর আলোকপাত করবে না, আলোচনার মধ্যে দাঁড়াচ্ছে না।
তবে ২০০৪ সালে ঠিক হয়েছিল। সভামালার নাম ছিল 'সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি' এবং তার প্রভাব ছিল অভূতপূর্ব, অভাবনীয়।
দু'হাজার তিন নভেম্বর নভেম্বর ঢাকায় বিবিসির নতুন অফিস করা হয়। এই প্রথম বিবিসির অফিসে ঢাকা স্টুডিও স্থাপন করা। লন্ডন থেকে প্রচারিত রেডিও সমাবেশে অংশগ্রহণ করার সুবিধাগুলো এই নতুন স্টুডিও সংযোগ করা হয়।
এই স্টুডিওর যাতে সদ্ব্যবহার করা হয়, বিশেষ করে ভোর রাতে রভাতে ঢাকা থেকে প্রত্যয় যোগ করা হয়, সে লক্ষ্যে কিছু প্রশিক্ষণের অনুশীলন করা হয়। অনুশীলনের অংশ বাংলার বিসিবির কর্মীরা নতুন রূপের রূপায়ণ করেন, যার একটি উদ্দেশ্য ছিল শ্রোতাদের সম্পৃক্ততা কর্মকাণ্ড চালানো হয়, দেখা যায়।
তাদের একটি প্রস্তাব ছিল শ্রোতাদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি জরিপ। বিষয়? সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি।
বিষয়টা নিয়ে চিন্তা এই জরিপের মাধ্যমে শুধু শ্রোতাদের সম্প্রচার করতে হবে না। বাংলার ইতিহাসের সেরা ব্যক্তিদের নিয়ে আলোচনা করার অপূর্ব সুযোগ তৈরি হবে। কোন ব্যক্তিত্বদের নিয়ে নিয়েমালা তৈরি করতে হবে, পরিচয়ও ঠিক হয়ে যাবে এই মধ্য দিয়ে।
সমালোচনা তখন উত্তর উত্তর নেই। গণতান্ত্রিকভাবে সরকারকে দেশ চালাচ্ছে। জীবনদল হাল্কা আন্দোলনের মধ্যে, দেশের কোন অস্থিরতা নেই, কোন অনিশ্চয়তা নেই। এই সময়ে বাংলার ইতিহাসের মনীষদের নিয়ে প্রশ্নমালার চেয়ে ইতি ধাপ আর কী হতে পারে?
প্রশিক্ষণের সময় আমার সহরা একটি সঙ্গীত বাছাই এই অনুষ্ঠানমালার পরবর্তী বা ট্রেলারের সাথে বজানোর জন্য। সঙ্গীতটি গতানুগতিক কোন বাংলা গানের সুর ছিল না। ব্রিটেনের ড্যাডফোর্ড জন্ম ব্রহ্মব্রহ্ম এবং লিন্ডে ফাউন্ডেশন ও দুই সিলেটি ভাই, শামুন শমসের-এর ব্যান্ড 'জয়'- এর 'জার্নি' টিউনটিই আমরা 'সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাংলা'র সুচনা সঙ্গীত হিসেবে।
প্রশ্ন উত্তর আমরা যখন জরিপটি করার সিদ্ধান্ত নিই, তখন আমাদের মনে হয়। প্রথম: কয়টা পর্ব হবে, ভিন্ন কয়জন সেরা বাংলাকে নিয়েমালা হবে? উত্তর: ২০জন ব্যক্তি, ২০টি পর্ব। দ্বিতীয় প্রশ্ন: পর্বগুলো কি এখানে সাপ্তাহিক হবে? উত্তর: শ্রোতার মনে দাগ কাটার জন্য প্রচারই শ্রেয়। তৃতীয় প্রশ্ন: এই পর্বগুলো প্রচার করা হবে? উত্তর: ডিসকাউন্ট পদ্ধতি প্রচার করা হবে – দ্বিতীয় দিন, প্রথম দিন ২০ নম্বর, দ্বিতীয় দিন ১৯ নম্বর, তৃতীয় দিন ১৮ ইত্যাদি। এর ফলে এক ধরনের উত্তেজনা এবং প্রতীক্ষার আমেজ হবে।
স্বাধীনতা দিবস থেকে বাংলা নববর্ষ
জানতে প্রশ্ন: এই ২০টি পর্ব কখন প্রচার করা হবে? উত্তর: ক্যালেন্ডারের দিকে তাকা একটি সময় মনে করা লাফ দিয়ে আসলো – মার্চ ২৬ তারিখ থেকে এপ্রিলের ১৪ তারিখ, ঠিক ২০ দিন। ভিন্নভাবে, স্বাধীনভাবে প্রথম দিন শুরু করে বাংলা নববর্ষের নববর্ষে শেষ। ইতিহাসের সেরা বাঙালিদের জীবন নিয়েমালা প্রচার করার জন্য এর চেয়ে ভালো সময় আর কী হতে পারে?
তবে এই বাজারের তথ্য সম্পর্কে আমরা অবগত শক্তি। প্রথমত, মুসলিম ভিডিওতে এধরনের সংগ্রহ-এর মধ্যে প্রকাশ করা হয়, যা নিয়ে আলোচনা হয়, না হয় তাকে তাহল্য করা হয়। তার চেয়ে বড় বিপদ ছিল ফলাফল নিয়ে আলোচনার বিষয়ে।
'হঠকারি জরিপ'
যেমন, ট্রেলার ট্রেলার কালে রাজনীতি একজন শ্রোতা বার্তা প্রচারের উপায়, “এই জরির ফলাফল প্রকাশের সাহস কি আপনি আছে?” কিন্তু এখানে সত্ত্বার কিছু ছিল বলে মনে হয়নি। আবার, পশ্চিমবঙ্গের একজন শ্রোতা এই জরিপ বন্ধ করার আবেদন আবেদন জানালেন। তাঁর লেখা: রবীন্দ্রনাথ নিতে ঠাকুর এবং সুভাষ চন্দ্র বোঁসের মধ্যে একজনকে বলা হয়েছে।
ঝুঁকিগুলো আমরা নিয়মিতভাবে যাবার সিদ্ধান্ত নিই। এখানে আমরা কোন মঙ্গল করতে না পারি। এখানে শ্রোতারা স্বপ্রণোদিত হয়ে দেখাবেন, এবং সেই দৃশ্যের প্রকাশ, কোন প্রকার মারপঁচ ছাড়াই ২০জন সেরা বাঙ্গালীর গঠন করা হবে। স্বপ্রণোদিত অংশগ্রহণের অধিকার করা জরিপ 'বিজ্ঞান অধিকার' নাও হতে পারে। ভিন্ন ভিন্ন বিষয়। কিন্তু এই যে নির্পেক্ষ, তা নিয়ে কোন প্রশ্ন উঠতে পারে না।
মার্চ তারিখ ২৬ তারিখে যাতেমালা শুরু করা হয়, সে লক্ষ্যে প্রতিদিন রেডিও উত্তর বা ট্রেডলার বাজাও, যার মাধ্যমে জয়ের-এর জন্য জার্টিউনটি শ্রোতাদের কাছে পরিচিতি লাভ করে। সংখ্যাটা শেষ পর্যন্ত চিঠি এবং ইমেইল গ্রহণ করা হয়।
প্রতি শ্রোতাকে পাঁচজন ব্যক্তিকে বাছাই করতে চাই। তাদের ক্রমানুসারে পয়েন্ট দেওয়া হয় – যেমন, প্রথম সম্পূর্ণ তাঁকে ৫ পয়েন্ট, দ্বিতীয় কুল চার, ইত্যাদি। সব পয়েন্ট যোগ করে পূরণ করা হয়, যাতে শতাধিক নাম স্থান পায়। প্রথম ২০ তারিখ নিয়ে গঠিত হয় ২০ পর্বেরমালা 'সর্বকাল সর্বশ্রেষ্ঠ বাংলা'।
শ্রেষ্ঠ বাংলার 'ডাউন'
এই সকাল নিয়ে আমরা কোন বিজ্ঞাপন তৎপরতা চালাইনি। এমনকি কোন সাংবাদিককে প্রেস রিলিজ পর্যন্ত দেওয়া হয় না। কিন্তু প্রথম পর্ব দ্বিতীয়, ২০ নম্বরে রাজনীতিবিদ সাংগঠনিকভাবে সোরাওয়াওয়াদীর নাম প্রচারের পরে দেখা গেল একটি গণবিজ্ঞপ্তির সারমপান ছাপা হয়েছে। কিছু দিন পর আরও দু'তিনটি পত্রিকা শ্রেষ্ঠ বাংলার 'ডাউন' কাভার করতে শুরু কর। সকাল যখন ১০ নম্বর সংখ্যায়, তখন আট-দশটি জাতীয় পত্রিকা গোটাই তাদের প্রথম পাতায় দেখায়। শেষের দিকে মোটামুটি সব পত্রিকা যোগ দেয়।
প্রথম স্থান, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সম্প্রচার নিয়ে বিপাকে পাওয়া হয়েছিল। দ্বিতীয় এপ্রিলের ১৩ এপ্রিল ঠাকুর ঠাকুরের নাম প্রকাশ করা হয়। পরের দিন, বাংলা নববর্ষের ছুটি। নববর্ষের প্রভাতী প্রথম স্থান। কিন্তু তার পরের দিন, ১৫ এপ্রিল কোন পত্রিকা বের হবে না। দু'দিন পর, ১৬ তারিখে শ্রেষ্ঠ বাংলার প্রথম স্থান আর 'তাজা খবর' থাকবে না।
তাই ১৩ তারিখে বেশ কয়েকটি পত্রিকা থেকে আমাদের ঢাকা অফিসে ফোনের স্থানের নামটি নিশ্চিত করার জন্য প্রথমে নিশ্চিত হওয়া উচিত, তারা ১৪ তারিখের পত্রিকাটি সেই খবর প্রকাশ করতে পারে। কিন্তু আমরা আমাদের মধ্যে বিস্তারিত আলোচনা করে নিলাম, ১৪ তারিখ আগে এই প্রথম স্থান আমরা সাংবাদিকদের সম্মেলন দিতে পারি না। আপনাকে দেওয়া হয়েছে রেডিও শ্রোতাদের জন্য, তাদের দেওয়া আমাদের 'ভোটে' তৈরি করা হয়েছে। সর্ব্বই প্রথম শুনবেন কাকে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি মনোনীত।
নববর্ষ ভোরে বাজারের নাম
সকাল সকাল ছয়টার বৈঠকে নেতা শেখর রহমানের নাম প্রকাশ করা হয়, তাঁর জীবন প্রচার করা হয়। তার দিন দিনই ভোটের প্রথম কার্যকরী গড়ে তুলতে পারে – যার নাম ১৯টি কল আসে। কিন্তু তারপরও, আমাদের উত্তর উত্তর না ফরোয়ার্ড
এই টালিমালা মাল্টা মিডিয়া এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে যে আগ্রহ এবং প্রতীক্ষার উত্তরণ ছিল, তা বিবিসি বাংলার অন্য কোন প্রক্রিয়া বা শুরু হয়েছিল বলে আমার জানা নেই। এপ্রিলের ১৬ তারিখের পত্রিকা মনে হয়েছে খবরটি 'বাসি' হয়ে গেছে। একবারে তাজা খবরের মতই অনেক পত্রিকা হবে শ্রেষ্ঠ বাংলা ছিল শীর্ষ খবর। একটি পত্রিকা সমগ্র ২০টি পর্ব নিয়ে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে।
দেশের মানুষ আনন্দ আনন্দিত হয়েছিলেন, আবার কিছু লোক বেশক্ষুব্ধও হয়েছিলেন। শেখ মুজিবের সমর্থন প্রতিপক্ষের অনুসারীরা এখানে একটি 'ষড়ের' আভাস খুঁজে খুঁজে বের করুন। রবীন্দ্র-প্রশ্ন প্রশ্ন, কীভাবে অন্য কোন বাংলা বিশ্বকবির ওপরে পান। অনেক সংবাদপত্র এইমালাকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দৃষ্টিতে শেখের স্থানের গুরুত্ব বিশ্লেষণ করে লেখা-লেখি প্রচার করে। মনে দু' গণগৌরব এই জরিপকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে আখ্য নেতা করে।
কয়েক দিন বিবিসির হিন্দি পরে একজন একজন সহিয়ার সহিয়ার আমাকে বললেন, সিইন প্রথমকুল না আসায় তিনি স্মরণ করেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে, ৩০ বছর আগে এই জরিপ হলে রবীন্দ্রনাথনি:সন্দেহে শ্রেষ্ঠ বাঙালি মনোনীত হতেন। কিন্তু এই ৩০ বছরের একটি যুগান্তকারী চালু হয়েছে – বিশ্ব বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন দেশের আবির্ভাব হয়েছে, যার জন্য শেখ মুজিব। এই জরিপের ফলাফল সেই বাস্তবতার প্রতিফলন।
কুড়ি জন শ্রেষ্ঠ বাঙালির জীবনকাহিনী খোঁজ এখানে ক্লিক করুন করুন।
(এই রিপোর্ট ২০১৬ সালে বিবিসি বাংলার ৭৫ বছর পূর্তি প্রমাণ 'বিসিলাইভ!' স্পটিকা থেকে পুন:প্রকাশ করা হল)